প্রকৃত ঈমান একটি নূর বিশেষ। এই নূর নবী, রাসুল ও আওলিয়ায়ে কেরামের সিনায় সংরক্ষিত থাকে। নবী ও রাসুলগণের যুগ শেষ হওয়ার পর, বেলায়েতের যুগে যে ব্যক্তি অলী-আল্লাহ্র সাহচর্যে গিয়ে সাধনার মাধ্যমে ঈমানের নূর নিজের ক্বালবে প্রজ্বলিত করতে সক্ষম হয়েছেন, তিনিই প্রকৃত ঈমানদার। আল্লাহ্ বলেন- قَالَتِ الْأَعْرَابُ أمَنَّا ، قُلْ لَّمْ تُؤْمِنُوا وَلَكِنْ قُوْلُوْا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيْمَانُ فِي قُلُوْبِكُمْ ، وَإِنْ تُطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُوْلَهُ لَا يَلِتْكُمْ مِّنْ أَعْمَالِكُمْ شَيْئًا إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ [উচ্চারণ: ক্বালাতিল আ'রাবু আমান্না, কুল লাম তু'মিনূ ওয়ালাকিন কুলু আসলামনা ওয়া লাম্মা ইয়াদখুলিল ঈমানু ফী কুলুবিকুম, ওয়া ইন তুত্বী'উল্লাহা ওয়া রাসূলাহু লা ইয়ালিতকুম মিন আ'মালিকুম শাইয়ান, ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহীম।] অর্থাৎ: "মরুবাসীরা বলে- আমরা ঈমান এনেছি। আপনি বলে দিন, তোমরা ঈমান তো আননি, বরং বলো- আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছি। আর ঈমান তো এখনো তোমাদের ক্বালবে প্রবেশ করেনি। কাজেই যদি তোমরা আল্লাহ্ ও রাসুলের আনুগত্য করো, তবে তিনি তোমাদের কর্মসমূহ থেকে একটুও কম করবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল ও অসীম দয়াময়।” (সূরা-আল হুজুরাত-৪৯: আয়াত-১৪) أَفَمَنْ شَرَحَ اللَّهُ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ فَهُوَ عَلَى نُوْرٍ مِّنْ رَّبِّهِ [উচ্চারণ: আফামান শারাহাল্লাহু সাদরাহ্ লিল ইসলামি ফাহুওয়া 'আলা নূরিম মির রাব্বিহী।] অর্থাৎ : “আল্লাহ্ ইসলামের জন্য যার ক্বালবের সুদুরের মোকাম খুলে দিয়েছেন, এবং যে তার প্রতিপালকের প্রদত্ত নূরের মাঝে রয়েছে, সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়?" (সূরা-আঝ ঝুমার-৩৯: আয়াত-২২) এ প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) এ আয়াত তেলাওয়াত করেন- أَفَمَنْ شَرَحَ اللَّهُ صَدْرَهُ لِلإِسْلَامِ فَهُوَ عَلَى نُوْرٍ مِّنْ رَّبِّهِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَيْفَ إِنْشِرَاحُ صَدْرِهِ؟ قَالَ : إِذَا دَخَلَ النُّوْرُ الْقَلْبَ انْشَرَحَ وَانْفَسَحَ [উচ্চারণ : "আফামান শারাহাল্লাহু সাদরাহু লিলইসলামি ফাহুওয়া 'আলা নূরিম মির রাব্বিহী" ফাকুলনা ইয়া রাসূলাল্লাহি (সাঃ) কাইফা ইনশিরাহু সাদরিহী? ক্বালা ইযা দাখালান নূরুল ক্বালবা ইনশারাহা ওয়ানফাসাহা।] অর্থাৎ : "আল্লাহ্ ইসলামের জন্য যার ক্বালবের সুদুরের মোকাম খুলে দিয়েছেন, এবং যে তার প্রতিপালকের প্রদত্ত নূরের মাঝে রয়েছে, সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়?' আমরা বললাম- হে আল্লাহ্ রাসুল (সাঃ)! কিভাবে ক্বালবের সুদুরের মোকাম খুলে যায়? জবাবে আল্লাহ্ রাসুল (সাঃ) বলেন- যখন ক্বালবের নূর প্রবেশ করে, তখন ক্বালব খুলে যায়, এবং সেটি প্রশস্ত হয়ে যায়।” (তাফসীরে দুররে মানছুর-২৩নং খণ্ড, পৃষ্ঠা-২১৯) সুতরাং ঈমানদার হতে হলে নবুয়তের যুগে নবী, রাসুল, এবং বেলায়েতের যুগে অলী-আল্লাহ্ সাহচর্যে যাওয়া একান্ত আবশ্যক। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- একজন কুমারী নারী যদি বই-পুস্তক পড়ে মা হওয়ার বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করে, উপরন্তু মা হওয়ার সম্পূর্ণ ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নিজের দেহে পুরুষের শুকীট ধারণ না করা পর্যন্ত যেমনি সন্তানের মা হতে পারে না, তেমনি যথোপযুক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন ঈমানদার তথা অলী-আল্লাহ্র নিকট থেকে ক্বালবে ঈমানের নূর ধারণ না করা পর্যন্ত শুধু কুরআন-হাদীস পড়ে মানুষের পক্ষে ঈমানের অধিকারী হওয়া সম্ভব নয়।
সেই সাথে মহিমান্বিত আল্লাহ্ ওহীর বাণী আল কুরআনের অন্য আয়াতে এরশাদ করেন-


