জেনে নিন সুফি সম্রাট শাহ দেওয়ানবাগী (রঃ) এর প্রবর্তিত ইসলামী সংস্কার ও শিক্ষা সম্পর্কে

আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে- 'মহান আল্লাহ্ নিরাকার, তাঁকে দেখা যায় না।' সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান বলেন- 'সমাজের প্রচলিত এ ধারণা ভুল। আসলে মহান আল্লাহ্ নিরাকার নন; তাঁর অপরূপ সুন্দর নূরের সুরত আছে। সাধনা-রিয়াজতের মাধ্যমে আল্লাহকে এ দুনিয়ার জীবনে দেখা যায়।'

আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে- 'হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) গরীব ছিলেন।' সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান বলেন-'হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কখনই গরীব ছিলেন না, তিনি ছিলেন ধনী। সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর দাদা হযরত আবদুল মুত্তালিব (আঃ) ছিলেন মক্কার শাসনকর্তা।'

রাহমাতুল্লিল আলামীন হযরত রাসুল (সাঃ) প্রবর্তিত ইসলামের মৌলিক শিক্ষা হচ্ছে- এলমে তাসাউফ, আল্লাহকে জানার বিজ্ঞান। সূফী সম্রাট এলমে তাসাউফ ইসলামী শিক্ষা বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রস্তাব দেন, এবং ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষায় তাসাউফ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

পবিত্র কুরআনে বহুবার বর্ণিত হয়েছে- 'আসমান ও জমিনের মালিক একমাত্র আল্লাহ্।' সূফী সম্রাট বলেন, নিজেকে জমির মালিক দাবি করা চরম গর্হিত ও শিরক। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে সমগ্র বাংলাদেশে সূফী সম্রাটের প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে জমি রেজিস্ট্রেশন প্রচলন করা হয়।

হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, 'দ্বীন জয়ী থাকবে ততদিন, যতদিন লোক শীঘ্র শীঘ্র ইফতার করবে।' যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হাদীস অবমাননাকর সময়সূচী পরিবর্তনের জন্য সরকারের কাছে যে প্রস্তাব উত্থাপন করেন, সে অনুযায়ী ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিজ্ঞানভিত্তিক সেহরী ও ইফতারের সময়সূচী প্রবর্তিত হয়েছে।

বৃটিশ শাসনামলে প্রবর্তিত রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির রেওয়াজ স্বাধীনতা পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশেও পালন করা হতো। যার ফলে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানগণ শুক্রবারের জুমার নামাজ ঠিকমত আদায় করতে পারতেন না। সূফী সম্রাট কর্তৃক রবিবারের পরিবর্তে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন ঘোষণা করার আবেদন ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরকার গ্রহণ করেন।

মানবজাতির সর্বোত্তম জীবন-বিধান আল কুরআন গবেষণার মাধ্যমে যুগের ইমাম সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান প্রমাণ করেছেন এর আয়াত সংখ্যা ৬,৬৬৬ (ছয় হাজার ছয়শ' ছেষট্টি) নয় বরং ৬,২৩৬ (ছয় হাজার দুইশ' ছত্রিশ) খানা।

বিধর্মীরা মুসলমানদের দু'টি পবিত্র স্থান মক্কা ও মদীনা শরীফ অবমাননা করার অসৎ উদ্দেশ্যে চান্ত করে, কাবা ও হযরত রাসুল (সাঃ)-এর রওজা শরীফের ছবি সংবলিত জায়নামাজ তৈরি করে। এ দু'স্থানের ছবি পায়ের নিচে রেখে নামাজ পড়া চরম বেয়াদবি। সূফী সম্রাট এরকম জায়নামাজ ব্যবহার অনুচিত প্রসঙ্গে সর্বসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- 'আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহ্র জন্য।' সূফী সম্রাট এ ভ্রান্ত ধারণাটি সংশোধন করে বললেন, কোরবানি বান্দার নামে নয়, বরং বান্দার পক্ষ থেকে আল্লাহর নামে দিতে হয়।

পূর্বে আমাদের ধারণা ছিলো পবিত্র আশুরা শুধুমাত্র শিয়া সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান। সূফী সম্রাট কুরআন ও হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছেন-পবিত্র আশুরা দিবসে আল্লাহ্ তায়ালা আরশে সমাসীন হয়েছিলেন, যে কারণে তাঁর অভিষেক উদ্যাপন উপলক্ষে এদিনে অপরিসীম রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হয়।

১২ই রবিউল আউয়াল বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর শুভজন্মদিন হওয়া সত্ত্বেও, বাংলাদেশে দিনটি ফাতেহায়ে দোয়াজ-দাহম ও সীরাতুন্নবী (সাঃ) হিসেবে পালিত হতো। সূফী সম্রাট এ দিনকে সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ ঈদ ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীতে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (সাঃ)-এর সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।

পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- 'নিশ্চয় আল্লাহ্ স্বয়ং ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর উপরে দরূদ পাঠ করেন, হে মু'মিনগণ! তোমরাও তাঁর উপর দরূদ পড় এবং শ্রদ্ধার সাথে সালাম পেশ করো।' একমাত্র মিলাদ মাহফিলে হযরত রাসুল (সাঃ)-এর শানে দরূদ পাঠ করে সশ্রদ্ধ সালাম পেশ করা হয়। সূফী সম্রাট প্রমাণ করেছেন- মিলাদ পড়া হারাম নয় বরং ফরজ।

পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত তাবুত বা সিন্দুক ছিলো শামশাদ কাঠের তৈরি একটি স্বর্ণখচিত সিন্দুক; যার মধ্যে সকল নবী ও রাসুলের ছবি মোবারক সংরক্ষিত ছিলো। সূফী সম্রাট বলেন- 'আল্লাহ্ তায়ালা যেহেতু নবী ও রাসুলগণের ছবি হযরত আদম (আঃ)-এর কাছে প্রেরণ করেছেন, সুতরাং ছবি তোলা হারাম হতে পারে না।'

শুক্রবারের জোহর ওয়াক্তের চার রাকাত ফরজ নামাজের পরিবর্তে দু'রাকাত নামাজ ও অবশিষ্ট দু'রাকাতের পরিবর্তে খুৎবার বিধান রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে খুৎবা প্রদান আরবী ভাষায় হওয়ায়, মুসল্লিগণ খুৎবার বিষয়বস্তু বুঝতে পারেন না। সূফী সম্রাট সর্বপ্রথম মাতৃভাষায় খুৎবা প্রদানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- 'তোমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আল্লাহ্র রজ্জুকে শক্ত করে ধরো।' যেহেতু সমগ্র পৃথিবীর জন্য চাঁদ একটি, মুসলিম জাতির কেন্দ্রবিন্দু মক্কা শরীফে চাঁদ দেখার সাথে সঙ্গতি রেখে সারা বিশ্বে একই দিনে যাবতীয় অনুষ্ঠানাদি উদযাপন সম্ভব। সূফী সম্রাট ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে চান্দ্রপঞ্জিকা প্রণয়নের একটি মডেল মুসলিম বিশ্বের সরকার প্রধানগণের কাছে উপস্থাপন করেন।

যুগে যুগে নবী-রাসুলগণ এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ্র পবিত্র বাণীর ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে স্বজাতির কাছে যে ধর্মীয় বিধান পেশ করেছেন, তা তৎকালীন নবী ও রাসুলের নামানুসারে পরিচিতি লাভ করে। একইভাবে বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রবর্তিত পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধানের নাম হচ্ছে মোহাম্মদী ইসলাম। সূফী সম্রাট মোহাম্মদী ইসলামকে বিশ্বব্যাপী প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে ঘরে ঘরে আশেকে রাসুল সৃষ্টি করছেন।
দেওয়ানবাগী সংস্কার আপনার আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক জীবনকে উন্নত করবে। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা অনুসরণ করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন গড়ে তুলুন।