ছবি তোলা হারাম নয়, ছবি তোলা ব্যক্তির সত্যতার প্রমাণ
সকল সংস্কার
ধর্মীয় সংস্কার

ছবি তোলা হারাম নয়, ছবি তোলা ব্যক্তির সত্যতার প্রমাণ

পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত তাবুত বা সিন্দুক ছিলো শামশাদ কাঠের তৈরি একটি স্বর্ণখচিত সিন্দুক; যার মধ্যে সকল নবী ও রাসুলের ছবি মোবারক সংরক্ষিত ছিলো। সূফী সম্রাট বলেন- 'আল্লাহ্ তায়ালা যেহেতু নবী ও রাসুলগণের ছবি হযরত আদম (আঃ)-এর কাছে প্রেরণ করেছেন, সুতরাং ছবি তোলা হারাম হতে পারে না।'

তাবুতে নবীদের ছবিকুরআনিক প্রমাণহাদীসের দলিল২০০৭ সালে সরকারি স্বীকৃতি

পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-

"আর বনী ইসরাঈলের নবী [শামুয়েল (আঃ)] তাদের আরো বললেন, তালুতের বাদশাহীর নিদর্শন হলো- তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে সেই তাবুত (তথা সিন্দুক) আসবে, যেটিতে থাকবে তোমাদের জন্য চিত্ত প্রশান্তি, আর তাতে থাকবে মুসা (আঃ) ও হারুন (আঃ)-এর বংশধরদের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী, যেটি ফেরেশতারা বয়ে আনবে।" (সূরা-আল বাকারাহ-২: আয়াত-২৪৮)

ওহীর বাণী পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত এ তাবুত বা সিন্দুক ছিলো শামশাদ কাঠের তৈরি একটি স্বর্ণখচিত সিন্দুক; যার মধ্যে সকল নবী ও রাসুলের ছবি মোবারক সংরক্ষিত ছিলো।

বর্ণিত আছে, হযরত আদম (আঃ) প্রার্থনা করেছিলেন, হে আল্লাহ্! আমার বংশধরদের মধ্যে নবী ও রাসুল হয়ে কারা কারা পৃথিবীর বুকে তশরিফ গ্রহণ করবেন, দয়া করে তাঁদের পরিচয় আমাকে জানার সুযোগ করে দিন। ফলে মহিমান্বিত আল্লাহ্ সকল নবী ও রাসুলের ছবি মোবারক হযরত আদম (আঃ)-এর নিকট প্রেরণ করেন।

হাদীস শরীফে আরো বর্ণিত হয়েছে, হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন-

"হযরত রাসুল (সাঃ) বিবাহে আসার পূর্বে, ফেরেশতা জিব্রাঈল একটি রেশমী কাপড়ে আমার ছবি নিয়ে হযরত রাসুল (সাঃ)-এর কাছে আগমন করেন এবং বলেন, এ আপনার স্ত্রী।" [তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন-৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৬০; তিরমিযী শরীফ-২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-২২৬; মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা-৫৭৩]

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পরম করুণাময় আল্লাহ্ স্বয়ং সকল নবী ও রাসুলের ছবি মোবারক পৃথিবীতে প্রেরণ করলেও, আমাদের সমাজে ছবি তোলা হারাম, নাজায়েজ, এরকম কুরআন ও হাদীস বিরোধী মতবাদ প্রচলিত ছিলো।

যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান সমাজের এ ভুল ধারণা সংশোধন করে বলেন- 'আল্লাহ্ তায়ালা যেহেতু নবী ও রাসুলগণের ছবি হযরত আদম (আঃ)-এর কাছে প্রেরণ করেছেন, সুতরাং ছবি তোলা হারাম হতে পারে না।'

অতঃপর তিনি বিষয়টি পবিত্র কুরআন ও হাদীসের অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণ করেন যে, ইসলামে ছবি তোলা জায়েজ।

দেখা যায়, ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে ছবি সংবলিত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে গিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার যখন বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন নির্বাচন কমিশন থেকে এ বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের দলিল চাওয়া হয়।

২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে জুলাই নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জনাব এস.এম. আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত ঐ প্রজ্ঞাপনের তৃতীয় ধারায় বলা হয়-

"ভোটার তালিকার জন্য ছবি তুলতে ধর্মীয়ভাবে কোন বাধা-নিষেধ নেই।"

এই সংস্কার শেয়ার করুন