মহান আল্লাহ্ নিরাকার নন; তাঁর অপরূপ সুন্দর নূরের সুরত আছে
সকল সংস্কার
ধর্মীয় সংস্কার

মহান আল্লাহ্ নিরাকার নন; তাঁর অপরূপ সুন্দর নূরের সুরত আছে

আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে- 'মহান আল্লাহ্ নিরাকার, তাঁকে দেখা যায় না।' সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান বলেন- 'সমাজের প্রচলিত এ ধারণা ভুল। আসলে মহান আল্লাহ্ নিরাকার নন; তাঁর অপরূপ সুন্দর নূরের সুরত আছে। সাধনা-রিয়াজতের মাধ্যমে আল্লাহকে এ দুনিয়ার জীবনে দেখা যায়।'

আল্লাহর নূরের সুরতকুরআনে আল্লাহর চেহারার বর্ণনাআল্লাহর দর্শনতাফসীর প্রণয়ন

আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে- 'মহান আল্লাহ্ নিরাকার, তাঁকে দেখা যায় না।' সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান বলেন- 'সমাজের প্রচলিত এ ধারণা ভুল। আসলে মহান আল্লাহ্ নিরাকার নন; তাঁর অপরূপ সুন্দর নূরের সুরত আছে। সাধনা-রিয়াজতের মাধ্যমে আল্লাহকে এ দুনিয়ার জীবনে দেখা যায়।' আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেন-

خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ

অর্থাৎ : "মহান আল্লাহ্ হযরত আদম (আঃ)-কে তাঁর নিজের সুরতে সৃষ্টি করেছেন।" (বোখারী ও মুসলিমের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা-৩৯৭)

সুতরাং যে মহিমান্বিত আল্লাহ্ তাঁর নিজের রূপে স্বীয় প্রতিনিধি আদম (আঃ)-কে রূপ দিলেন, তাঁকে নিরাকার বলার চেয়ে বড় ভুল জগতে আর আছে কি? তবে মহান আল্লাহ্ মানুষের মত রক্ত-মাংসের দেহধারী নন; তিনি নূরের। পরম করুণাময় আল্লাহ্ স্বরূপে বিদ্যমান বলেই, তিনি সকল কালের সকল যুগের নবী ও রাসুলদের মাধ্যমে মানবজাতিকে নির্দেশ দিয়েছেন- তারা যেন একমাত্র উপাস্য আল্লাহ্ ইবাদত করে।

সূফী সম্রাট বলেন- 'এক, দুই, তিন, এগুলো গণিতের সংখ্যা। নিরাকার কোন কিছুকে এ সংখ্যা দ্বারা গণনা করা যায় না। যার আকার আছে, কেবল তাকেই এক গণনা করা যায়। সুতরাং অশেষ দয়াময় আল্লাহ্ একমাত্র উপাস্য, তাঁর নূরের রূপ আছে; তিনি নিরাকার নন।' একইসাথে সূফী সম্রাট বলেন-'মহান আল্লাহ্ অপরূপ সুন্দর নূরের চেহারা মোবারক রয়েছে।' আর এ বিষয়টির বর্ণনা পবিত্র কুরআনেও রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেন-

فَأَيْنَمَا تُوَلُّوْا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ

অর্থাৎ : "তোমরা যেদিকে তাকাও, সেদিকেই আল্লাহ্র চেহারা মোবারক বিদ্যমান রয়েছে।" (সূরা-আল বাকারাহ-২: আয়াত-১১৫)

এভাবেই মহান আল্লাহ্ ওহীর বাণী আল কুরআনের ১৪ (চৌদ্দ) খানা আয়াতে তিনি নিজেই তাঁর চেহারা মোবারকের বর্ণনা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে মহিমান্বিত আল্লাহ্র চক্ষু মোবারকের বর্ণনায় ৬৩ খানা আয়াত নাযিল হয়েছে। আল্লাহ্ বলেন-

وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا

অর্থাৎ: "হে রাসুল (সাঃ)! আপনি আপনার প্রতিপালকের নির্দেশের অপেক্ষায় ধৈর্যধারণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি আমার দুই চোখের সামনে রয়েছেন।" (সূরা-আত্ব তুর-৫২: আয়াত-৪৮)

এমনিভাবে পরম করুণাময় আল্লাহ্ শ্রবণেন্দ্রিয় বা কান মোবারকের বর্ণনায় ওহীর বাণী আল কুরআনে ৪৮ (আটচল্লিশ) খানা আয়াত নাযিল হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মহান আল্লাহ্র জবান মোবারকের বর্ণনায় ওহীর বাণী আল কুরআনে ৪৭৭ খানা আয়াত, একইভাবে তাঁর হাত মোবারকের বর্ণনায় ১৭ খানা আয়াত, তাঁর দেহ মোবারকের বর্ণনায় ৬ খানা আয়াত, তাঁর কদম মোবারকের বর্ণনায় ২ (দুই) খানা আয়াত নাযিল করে অশেষ দয়াময় আল্লাহ্ প্রমাণ করেছেন- তিনি নিরাকার নন, তাঁর নূরের রূপ আছে।

সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান বলেন-'পৃথিবীতে আগত সকল নবী ও রাসুল আল্লাহকে দেখেছেন, তাঁরা আল্লাহ্ পরিচয় লাভ করেছেন, তাঁদের কিছু সংখ্যক সরাসরি আল্লাহ্র সাথে কথাও বলেছেন। নবুয়ত পরবর্তী বেলায়েতের যুগে তরীকার ইমামগণ, মাজহাবের ইমামগণ মহান আল্লাহকে দেখেছেন, তাঁর পরিচয় লাভকরেছেন, এমনকি তাঁদের কেউ কেউ আল্লাহ্র সাথে কথাও বলেন। আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিম ঘটেনি।'

এ প্রসঙ্গে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান বলেন- 'আমি আমার মহান মালিক আল্লাহকে দেখেছি। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন আমাকে যতবার তাঁর দীদার দ্বারা ধন্য করেছেন, আমি ততবারই দেখেছি- 'আল্লাহ্ নিরাকার নন; তিনি অপরূপ সুন্দর নূরের সুরতে স্বরূপে বিদ্যমান।'

অতঃপর সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান সমাজে প্রচলিত ভুল ধারণা সংশোধন করার লক্ষ্যে তিনি সুমহান আল্লাহকে যে রূপে দেখেছেন, ওহীর বাণী আল কুরআন থেকে মহান প্রভুর সে রূপের বর্ণনা খুঁজে বের করে আল্লাহ্ জাত-পাকের পরিচয় বর্ণনা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি আল্লাহ্ পরিচয়ের উপর বিষয়ভিত্তিক তাফসীর লেখার মহান কাজে হাত দেন।

অতঃপর একে একে 'তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী জাত-পাকের পরিচয়-১ম খণ্ড' এবং 'তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী আল্লাহ্ আল্লাহ্ গুণবাচক নামের পরিচয়-২য় খণ্ড থেকে ৮ম খণ্ড' পর্যন্ত তাফসীর প্রণয়ন করেন। এ তাফসীর শরীফ মুসলিম বিশ্বের জ্ঞানের ভাণ্ডারকে পূর্ণতা দানকারী ও নজিরবিহীন একমাত্র তাফসীর, যে তাফসীর শরীফে আল্লাহ্র আকারের বর্ণনা, তাঁর অপরূপ সুন্দর নূরের রূপের বর্ণনা তাফসীর প্রণেতার প্রত্যক্ষ দর্শন থেকে যেমন উপস্থাপিত হয়েছে, তেমনি মহিমান্বিত আল্লাহ্ আসমাউল হুসনা তথা সুন্দর সুন্দর গুণবাচক নামের মহিমা উপস্থাপন করে প্রমাণ করা হয়েছে- মহান আল্লাহ্ সর্বগুণের আধার, তাঁর নূরের রূপ আছে; তিনি নিরাকার নন।

যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লাজান তাঁর হায়াতে তাইয়্যেবার সুদীর্ঘ তেত্রিশটি বছর জুড়ে আল্লাহ্র পরিচয় লিপিবদ্ধ করার সুমহান কাজে মশগুল ছিলেন। এ মহামানব বর্তমান বিশ্বে আল্লাহ্ পক্ষ থেকে জামানার মোজাদ্দেদ হিসেবে প্রেরিত হওয়ার কারণে তিনি ইসলাম ধর্মে অনুপ্রবেশ করা অসংখ্য কুসংস্কার সংশোধন করে হযরত রাসুল (সাঃ)-এর প্রকৃত ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম সমাজে তুলে ধরেছেন। তাঁর অসংখ্য ধর্মীয় সংস্কারের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ সংস্কার- অশেষ দয়াময় আল্লাহ্ নিরাকার নন; তাঁর অপরূপ সুন্দর নূরের সুরত আছে।

এই সংস্কার শেয়ার করুন